ফরাসী বার্তা সংস্থা এএফপি খবর দিচ্ছে, সিরিয়ায় ৮১০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তুরস্ক ও সিরিয়ায় এই ভূমিকম্পে মোট মৃতের সংখ্যা এখন ২,৩০০-এরও বেশি।
ভোরে সবাই যখন গভীর ঘুমে তখন শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও সিরিয়াসহ আশপাশের দেশগুলো। ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ১ হাজার ৯০০ ছাড়িয়েছে। ধসে পড়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেকে আটকা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় তুরস্ক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। দেশটি ৮৪ বছরের মধ্যে এত শক্তিশালী ভূমিকম্প দেখেনি।
ভোরে সবাই যখন গভীর ঘুমে তখন শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও সিরিয়াসহ আশপাশের দেশগুলো। ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ১ হাজার ৯০০ ছাড়িয়েছে। ধসে পড়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেকে আটকা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় তুরস্ক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। দেশটি ৮৪ বছরের মধ্যে এত শক্তিশালী ভূমিকম্প দেখেনি।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানায়, স্থানীয় সময় আজ সোমবার ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল সিরিয়া সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮।
সংস্থাটি আরও জানায়, তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারাসহ দেশটির অন্যান্য শহরে এবং পার্শ্ববর্তী সিরিয়াসহ প্রতিবেশী দেশ লেবানন, সাইপ্রাস, ইসরায়েলেও এই ভূকম্পন অনুভূত হয়। এরপর কয়েকবার পরাঘাত আঘাত হানে। এগুলোর মধ্যে একটি ছিল ৬ দশমিক ৪ ও একটি ৬ দশমিক ৫ মাত্রার।
আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, তুরস্কে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো হলো কাহরামানমারাস, গাজিয়ানতেপ, সানলিউরফা, দিয়ারবাকির, আদানা, আদিয়ামান, মালত্য, ওসমানিয়ে, হাতায় ও কিলিস। আর সিরিয়ার আলেপ্পো, ইদলিব, হামা ও লাতাকিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভূমিকম্পে দুই দেশের কয়েক হাজার ভবন ধসে পড়েছে। ঘটনার পরপরই অনুসন্ধানকারী ও উদ্ধারকারী দল কাজ শুরু করে। তবে তুরস্কে শীতকালীন তুষারঝড়ের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। তুষারে অনেক সড়ক ঢেকে গেছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ভূমিকম্পে হতাহতদের প্রতি গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি এই বিপর্যয় মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন।
প্রথম ভূমিকম্পের কয়েক ঘণ্টা পর গাজিয়ানতেপ থেকে প্রায় ৮০ মাইল দূরে তুরস্কের কাহরামানমারস প্রদেশের ইলবিস্তান জেলায় আরও একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫। তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানায়, এটি কোনো পরাঘাত নয়। এটা নতুন ভূমিকম্প। প্রথম ভূমিকম্পের পর এই প্রদেশে এখন পর্যন্ত ৭০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে দ্বিতীয় ভূমিকম্পের কারণে হতাহতের বিষয়ে জানা যায়নি।
চোখের সামনে জানালাগুলো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়
এ ঘটনায় বেঁচে যাওয়া তুরস্কের মালত্য শহরে ২৫ বছর বয়সী ওজগুল কনাকচি বলেন, ভূমিকম্পের সময় তিনি ও তাঁর ভাই ঘুমাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে বলি, তুমি কি কাঁপছ? আমি ল্যাম্পের (বাতি) দিকে তাকালাম। মনে হচ্ছিল ল্যাম্পটি ভেঙে যাচ্ছে। আমরা আমাদের তিন বছর বয়সী ভাতিজাকে সঙ্গে নিয়ে লাফিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।’ ওজগুল কনাকচি বলেন, সব লোক এখন রাস্তায় অবস্থান করছেন। তাঁরা কী করবেন, তা নিয়ে বিভ্রান্ত।
৮৪ বছর পর তুরস্কে এমন ভয়াবহ ভূমিকম্প
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ভূকম্পনবিদ স্টিফেন হিকস বলেন, ১৯৩৯ সালের ডিসেম্বরে তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। ওই সময় ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল। এ ঘটনার পর ১৯৯৯ সালে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প ইস্তাম্বুলের দক্ষিণে তুরস্কের মারামারা অঞ্চলে আঘাত হানে। এতে সাড়ে ১৭ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল।
সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা, এএফপি, রয়টার্স
0 Comments