Ad Code

Latest

6/recent/ticker-posts

রাতের অন্ধকারে বাড়িতে আগুন, মাথায় হাত চার পরিবারের

 

জছিয়ার, মফিসার, মফিজার

জাফর হোসেন জাকির, প্রকাশক ও সম্পাদকঃ
রাত ৮ টা বাজে মুসলিম মানুষেরা নামাজ ঘরে। হটাৎ চিৎকার দিয়ে উঠলো আগুন আগুন। রাতে আগুনের শিখা দূর থেকে দেখা যায়। প্রায় এক কিলোমিটার দূর থেকে পথচারীর ধারন করা ভিডিও দেখে বোঝা যায় সবুজ শ্যামল খেতের মাঝে একটি গ্রামের বাড়িতে আগুন লেগেছে। আশপাশের মানুষ  দৌড়ে এসে দেখতে পায় ঘরের মধ্যে আগুন। রাত হওয়ায় সাহায্য করতে আসা মানুষজন পাশে পুকুর কিংবা পানি খুঁজে না পাওয়ার দিশেহারা হয়ে পরে। ফলে শোরগোল বাড়তে থাকে এবং মানুষের ভীড় বেড়ে গেলে ফায়ার সার্ভিস অফিসে ফোনে যোগাযোগ করলে আগুন নিভানো কর্মীসহ গাড়ি আসলেও প্রয়োজনীয় রাস্তা না থাকার কারণে নির্দিষ্ট স্থানে যেতে পারেনি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে আসা এলাকাবাসী নিরুপায় হয়ে পাশের ঘরগুলো বাঁচাতে টিনের ব্যারা খুলে শিশু, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ ঘরের আসবাবপত্র বেড় করতে পারলেও পাঁচটি ঘর আগুনে পুরে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারেনি।

নীলফামারী জেলা ডিমলা উপজেলার বালাপাড়ায় ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে গত ২৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার এমন ঘটনা ঘটে। দৈনিক ভোরের আকাশের প্রতিনিধি সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করেন, পাঁচটি ঘরের মধ্যে কোনো কোনো ঘরের চালের টিন ও  খুঁটিসহ পুরে ছাঁই হয়ে যায়। বাড়িতে ভেতরে থাকা বিশাল দেহের আম গাছটিও পুরে যায়।বালাপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা তিনভাই জছিয়ার রহমান, মসিয়ার রহমান, মফিজার ও ভাগিনা আব্দুর রহিম পৃথক খেলেও একই জায়গায় যৌথভাবে থাকতো। বিভিন্ন ব্যাংকে ঋণের টাকা দিয়ে তারা থাকার ঘর তৈরি করেছে। ঋণের পরিমান প্রায় ৩ লক্ষ। সেই আজ পুরে ছাঁই। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোয়াল ঘরের মশা তাড়ার আগুনের সূত্রপাত্র থেকে এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এই অগ্নিসংযোগ ঘটনায় পুড়ে যাওয়া ও অন্য বাড়িগুলো রক্ষা করতে গিয়ে ভাঙচুর হওয়া সম্পদের অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। চার পরিবারের সদস্যরা খেটে-খাওয়া দিনমজুর। কারো কারো সন্তান প্রাইমারী স্কুলে কিংবা মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। ঘরে আগুন লাগার কারণে সবার বই পুড়ে যায়। প্রাইমারিতে ১ম শ্রেণিতে পড়া আখি মনির স্কুলে যাওয়ার সাইকেলটিও পুরে ছাঁই হয়ে পড়ে আছে। কান্নাজড়িত কন্ঠে জছিয়ার রহমানের স্ত্রী সাহের বানু বলেন, ঘরে পুড়ি ছাঁই হওয়ার সাথে হামার দুঃখকষ্ট বারি(বেড়ে) গেইছে। হামার ছোয়ালার(সন্তান) বই লাও পুড়ি গেইছে। হামলা এলা থাকিমো ক্যামন করি।
মসিয়ার রহমানের স্ত্রী শেরিনা বেগম বলেন, ছোয়াটার ইস্কুল যাওয়া সাইকেটাও পুড়ি গেইছে। ঘরের চাউল পুড়ি গেইছে। হামরা এলা খামো কি, চলিমো ক্যামন করি। হামার পড়নের কাপড়লাও পুড়ি গেইছে।
পরের দিন সকালে চাল, খড়ি আর পাতিল পুড়ে যাওয়া মানুষগুলোর খাবারের ব্যবস্থা করেন সামাজিক সংগঠন বালাপাড়া গণ সুরক্ষা পরিষদ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রাসেল মিয়া দৈনিক ভোরের আকাশ'কে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আগে অবগত ছিলাম না। আপনার মাধ্যমে জানতে পারি। বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Post a Comment

0 Comments